
রূপান্তর সংবাদ ডেস্ক:
ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ‘টমাহক’ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দীর্ঘ ফোনালাপ হয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী চলা এ ফোনালাপে ট্রাম্পকে কঠোর বার্তা দিয়েছেন পুতিন। স্পষ্টভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ইউক্রেনকে কোনোভাবেই দীর্ঘপাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা যাবে না। আর তেমনটা ট্রাম্প করলে মস্কো-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) টিআরটি ওয়ার্ল্ড ও স্কাই নিউজের পৃথক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এই তথ্য। প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীর্ঘ ফোনালাপে ইউক্রেন যুদ্ধ ও ভবিষ্যৎ শান্তি আলোচনার বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে।
ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের ফোনালাপ নিয়ে বৃহস্পতিবার মস্কোয় সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের সহকারী ইউরি উশাকভ বলেন, পুতিন পুনরায় তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন যে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তবতা বদলাতে পারবে না। বরং এই ক্ষেপণাস্ত্র দুই দেশের সম্পর্ক এবং ইউক্রেনে শান্তিপূর্ণ সমাধানের সম্ভাবনাকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
উশাকভ আরও জানান, দুই নেতার মধ্যে প্রায় আড়াই ঘণ্টার ফোনালাপ ছিল খুবই ফলপ্রসূ, খোলামেলা ও গোপনীয়। আলোচনায় ইউক্রেন যুদ্ধই ছিল মুখ্য বিষয়। এছাড়া ট্রাম্পের সামনে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির একটি বিস্তারিত মূল্যায়নও তুলে ধরেন পুতিন। রুশ কর্মকর্তার ভাষায়, মস্কো ওয়াশিংটনকে জানায়- রুশ বাহিনী এখনো ‘পুরো ফ্রন্টলাইনে কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ’ ধরে রেখেছে। অপরদিকে ট্রাম্প বারবার জোর দিয়ে বলেছেন, যুদ্ধ দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন।
উশাকভ আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের অন্যতম মূল বক্তব্য ছিল- ইউক্রেন সংঘাতের অবসান ঘটলে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিশাল সুযোগ সৃষ্টি হবে। আলোচনায় দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে সরাসরি সাক্ষাতের সম্ভাবনাও উত্থাপিত হয়। উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা অবিলম্বে ট্রাম্প ও পুতিনের পরবর্তী বৈঠকের প্রস্তুতি শুরু করবেন বলেও তারা সম্মত হয়েছেন। সম্ভাব্য স্থান হিসেবে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টের নাম উঠে এসেছে।পুতিন ও ট্রাম্পের সবশেষ মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়েছিল গত আগস্টে আলাস্কায়। তবে, সেখানেই শান্তি আলোচনার অগ্রগতি থেমে যায়। এরপর থেকে ট্রাম্প ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবারের ফোনালাপের পর ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেন, তিনি ও পুতিন বুদাপেস্টে সাক্ষাৎ করে যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা করবেন। এর আগে, দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল আগামী সপ্তাহে একটি বৈঠক করবে। অন্যদিকে শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন ট্রাম্প। এই বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় হবে ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও দীর্ঘপাল্লার অস্ত্র সরবরাহ করা। এর আগে, চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কাছাকাছি’ আছেন।