বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রংপুরে ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড প্রায় ১২ শ ঘর-বাড়ি উদ্দীপনা ও প্রত্যয়ের মধ্য দিয়ে রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের নতুন কমিটির অভিষেক ৪৭,৭১ ও ২৪শের বিপ্লব অর্থবহ করতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার বিকল্প নাই: শ্রীপুরে দুর্নীতিমুক্ত-সন্ত্রাসমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গ্রাম্য বৈঠক অনুষ্ঠিত  ‎তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন শ্রীপুরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শারদীয় শুভেচ্ছা ও উপহার বিতরণ নওগাঁর পত্নীতলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান নিহত বদলগাছীতে সাংবাদিক আশরাফুল ইসলামের স্মরণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রংপুরে সাংবাদিক হত্যা চেষ্টা মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার নড়াইলে বাস টার্মিনালে অবৈধ টোল আদায় বন্ধে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ

পেপসি’র পণ্য নিয়ে ভোগান্তিতে দোকানি, স্বাস্থ ঝুঁকিতে ক্রেতা

শফিকুল আলম ইমন, রাজশাহী
  • Update Time : সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০২৪
  • ১৪৫ Time View

শফিকুল আলম ইমন, রাজশাহী

বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে বিক্রিত এবং জনপ্রিয় সুগন্ধযুক্ত পানীয় হিসেবে কোকাকোলা, পেপসি, সেভেন আপ, ডিউ, মিরিন্ডা অন্যতম। কিন্তু এই জনপ্রিয় পানীয় এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজশাহীর দোকানীদের কাছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বছরের পর বছর পড়ে থাকলেও তা তুলে নিচ্ছে না ডিস্ট্রিবিউটর কানেক্ট। আর এই পণ্য নিয়ে বিপাকে পড়ছেন খুচরা বিক্রেতা। ডিস্ট্রিবিউটরকে এসকল পণ্য তুলে নেয়ার কথা বললে হয়রানি করা হচ্ছে পুলিশ দিয়ে, দেখানো হচ্ছে মামলার ভয়।

অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহী নগরীর কাজলা মোড়ের মা ভ্যারাইটি স্টোরে কানেক্ট ডিস্ট্রিবিউটর এর সেভেন আপ, ডিউ, মিড়িন্ডা ও পেপসি প্রায় ৬ মাস আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু তা এই ডিস্ট্রিবিউটর কোনভাবেই তুলে নিচ্ছ না নিয়ে বা পরিবর্তন না করে দোকান মালিককে প্রশাসন দিয়ে ভয় দেখানো সহ মামলা করবে বলেও হুঁশিয়ারি দিচ্ছে কানেক্ট ডিস্ট্রিবিউটর এর ম্যানেজার মাসুম। পণ্য ড্যামেজের ঘটনায় ডিস্ট্রিবিউটর ও এসআর দায়ী বলে অভিযোগ করছেন খুচরা বিক্রেতারা। এদের যোগসাজশে কম ডেটের এই কোমল পানীয় না জানিয়ে দোকানীদের কাছে বিক্রি করে থাকে তারা।

এ ধরনের ভোগান্তির স্বীকার শুধু মা ভ্যারাইটি স্টোর-ই নয়। এই তালিকায় রয়েছে কাজলা মোড়ের বার্লিন স্টোর, ইয়াসিন স্টোর, ধরমপুর এলাকার সাগর স্টোর, সৈনিক স্টোর সহ তালাইমারী, জাহাজঘাট, আমজাদের মোড়, চাররাস্তার মোড়, সুরাফানের মোড়, মিজানের মোড়, সাতবাড়িয়া, বিনোদপুর বাজার, ফুলতলা, রেলগেট, ভদ্রা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও
সাহেব বাজার সহ রাজশাহীতে অবস্থিত এরকম অর্ধ-শতাধিক দোকানদারদের তারা বিভিন্নভাবে জিম্মি করে রাখে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক দোকানী বলেন, আমরা বিভিন্ন কোম্পানির কোমল পানীয় বিক্রি করি। কিন্তু সমস্যা শুধু রাজশাহীর কানেক্ট ডিস্ট্রিবিউটর। তারা প্রয়োজনের তুলনায় অধিক মালামাল চাপিয়ে দেয়, আবার মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে তা উত্তোলন করতে বা পরিবর্তন করতে গড়িমসি করে। আর দোকানদার মেয়াদ উত্তীর্ণ পানীয় তুলে নেয়ার চাপ দিলে সে দোকানে যাওয়া বন্ধ করে দেয় এসআর। এখানেই শেষ নয় তারা বিভিন্নভাবে আমাদের হয়রানি ও পুলিশের ভয়ও দেখায়।

জানা যায়, মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্য রাজশাহীর সব জায়গাতেই বিক্রি হচ্ছে অনায়াসে। তবে শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামে এসব পণ্যের বিক্রি বেশি। আর এসব পণ্য কিনে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন ক্রেতারা। তাদের ভুগতে হচ্ছে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায়। মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যে গুণগত মানের পরিবর্তন ঘটতে পারে, বদলে যেতে পারে রং, স্বাদ ও গন্ধ। কারণ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলে খাদ্যের প্রিজারভেটিভ কাজ করে না। তখন খাদ্যের মধ্যে বিভিন্ন জীবাণু জন্ম নেয়। জীবাণুগুলো বংশ বিস্তারের সময় খাদ্যে এক ধরনের টক্সিন উৎপন্ন হয়, যা মানুষের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এর ফলে পাকস্থলীর বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। ডায়রিয়া, আমাশয়ের মতো ভয়াবহ রোগ হতে পারে।

উল্লেখ্য, এর আগেও রাজশাহীতে বোতলে নতুন করে স্টিকার লাগিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ কোমল পানীয় বাজারজাত করার অভিযোগ উঠেছিল। ভয়ংকর এ কাজ করেছেন রাজশাহী নগরীর খড়খড়ি এলাকার ডিলার আনোয়ারুল ইসলাম আনার। বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ ও স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই পানীয় শহরের বাইরে পবা, দুর্গাপুর, মোহনপুর. তানোর, গোদাগাড়ী ও বাগমারা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বাজারজাত করছেন তিনি।

এ বিষয়ে কানেক্ট ডিস্ট্রিবিউটরের ম্যানেজার মাসুম বলেন, আমাদের কিছু প্রশাসনিক কাঠামোগত সমস্যা থাকায় কিছুদিন হলো মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য মার্কেট থেকে তোলা হয়নি। এখন আমরা তা ফেরত নিচ্ছি। সেভেন আপ বড় কোম্পানি। এর আগে এমন ঘটনা ঘটেনি। সাময়িক সমস্যা হয়েছিলো তা আমরা রিকভার করে নিয়েছি।

জানতে চাইলে এরিয়া ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা বছরে একবার মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য উত্তোলন করি। এটাই আমাদের কোম্পানির নিয়ম। আর মামলা বা হুঁমকির বিষয়টি সঠিক নয়। আমি এবিষয়ে এর বেশি কিছু বলতে পারিনা, আমার হায়ার অথরিটি আছে।

এবিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় বিএসটিআই অফিসের প্রধান উপ-পরিচালক (সিএম) সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার এ বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মার্কেটে মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য সরবরাহ বা বিক্রি করা অপরাধ। এমন হলে দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category