শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:২৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নওগাঁয় বিএমএসএফের উদ্যোগে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে জরুরি সভা গাজীপুর সদর উপজেলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন  নড়াইলে কেরাম খেলে বাড়ি ফেরেনি শোয়েবুর,পরদিন পুকুরে মিললো মরদেহ কলকাতায় ‘পার্টি অফিস’ খুলেছে আওয়ামী লীগ গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তীব্র ক্ষোভ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ১৯০ জন সন্ধ্যায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস, ৭ জেলায় সতর্কতা জারি এশিয়া কাপ বয়কট করল পাকিস্তান, কপাল খুলল বাংলাদেশের নির্বাচন বিলম্বিত করতে পিআর বাণী দিচ্ছে জামায়াত: মেজর হাফিজ তিমুরের জালে এক হালি দিয়ে বিরতিতে বাংলাদেশ

মাদারীপুরে ডাসারে অর্থের বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ

জাহিদ হাসান, মাদারীপুর
  • Update Time : বুধবার, ২২ মে, ২০২৪
  • ১০১ Time View

জাহিদ হাসান, মাদারীপুর 

মাদারীপুরের ডাসারে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে একটি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিমল মল্লিকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসহ স্থানীয়রা ব্যক্তিবর্গ।
জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করে, ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের চলবল উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ১৭ মে শুক্রবার প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের সভাপতি তার পছন্দের প্রার্থীকে চাকুরী দেওয়ার জন্য মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে লোক দেখানো লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষা নিয়ে জুয়েল রায় নামের একজন প্রার্থীকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। অর্থ লেনদেনের বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় ভাবে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এতে চাকুরী প্রার্থী ৯ জনের পরিবর্তে মাত্র ৪ জন প্রার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ রয়েছে, চলবল উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির দুইবারের সভাপতি বিমল মল্লিক পার্শ্ববর্তী কোটালীপাড়া উপজেলার পীড়ারবাড়ি বাজারের এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর বাসায় বসে ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সভাপতি তার পছন্দের প্রার্থী জুয়েল রায়কে পরীক্ষার আগের দিন রাতে সরবরাহ করে। এতে ওই প্রার্থীকে পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করিয়ে চুড়ান্ত ভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া গত ১৬ মে বৃহস্পতিবার রাতে শশিকর কলেজের পশ্চিম পাশে নির্জন জায়গায় গোপনে উত্তম হালদারের উপস্থিতি সভাপতি বিমল মল্লিক প্রধান শিক্ষক পদের প্রার্থী দীপংকর হালদারের কাছে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু দীপংকর হালদার টাকার বিনিময়ে চাকরী গ্রহণের প্রস্তাব অস্বীকার করেন বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই বিষয়ে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য অরুন মল্লিক বলেন, চলবল স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে ৯ জন প্রার্থী আবেদন করেছিল। নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের তথ্য ছড়িয়ে পড়লে ৫ জন প্রার্থী নিয়োগ বোর্ডের উপরে আস্থা হারিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি। এতেই প্রমাণ হয় এই নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে। এই নিয়োগের অনিয়মগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি রক্ষা করবে বলে আমি দাবী করছি।
প্রধান শিক্ষক পদের প্রার্থী দীপংকর হালদার বলেন, গত ১৬ মে বৃহস্পতিবার রাতে শশিকর কলেজের পশ্চিম পাশে নির্জন জায়গায় গোপনে উত্তম হালদারের উপস্থিতি সভাপতি বিমল মল্লিক প্রধান শিক্ষক পদের প্রার্থী দীপংকর হালদারের কাছে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। আমি তা নাচক করে দেই। টাকার বিনিময়ে চাকুরী নিতে আমি অস্বীকার করি।’
স্থানীয় বাসিন্দা শচীন্দ্রনাথ বাড়ৈ বলেন, ‘স্কুলটি দীর্ঘদিন ধরেই অনিয়ম চলছে। বর্তমান সভাপতি তিনি তার নিজের ইচ্ছা মতন এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। কখন কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তা ম্যানেজিং কমিটির অনেক সদস্যকে অবহিতই করেন না। আমি মনে করি, এই স্কুলের শিক্ষক নিয়োগে অর্থের বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাস করে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদানের অভিযোগের সত্যতা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা রঞ্জিত মল্লিক বলেন, স্কুলের সভাপতি বেশ কিছু অনিয়ম আগেও করেছে। তিনি যখন প্রথমবার সভাপতি হয়। ঐ মেয়াদে সভাপতি তার আপন ভাইকে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে দপ্তরী পদে নিয়োগ দিয়েছেন। সভাপতি বিমল মল্লিক গাজীপুরের টঙ্গী সরকারি কলেজের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত অবস্থায় নিজ গ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে সক্রিয়ভাবে অপ-রাজনীতি করে যাচ্ছেন। এই সব বিষয় তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবী করছি।
অভিযোগের বিষয়ে নবগ্রাম ইউনিয়নের চলবল উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিমল মল্লিক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে। তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
এই বিষয়ে মাদারীপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাবিব উল্লাহ খান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ যদি লিখিত অভিযোগ আমার কাছে দেয়, তাহলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর সত্যতা পাওয়া গেলে নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ করা হবে।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category