মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রংপুরে ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড প্রায় ১২ শ ঘর-বাড়ি উদ্দীপনা ও প্রত্যয়ের মধ্য দিয়ে রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের নতুন কমিটির অভিষেক ৪৭,৭১ ও ২৪শের বিপ্লব অর্থবহ করতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার বিকল্প নাই: শ্রীপুরে দুর্নীতিমুক্ত-সন্ত্রাসমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গ্রাম্য বৈঠক অনুষ্ঠিত  ‎তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন শ্রীপুরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শারদীয় শুভেচ্ছা ও উপহার বিতরণ নওগাঁর পত্নীতলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান নিহত বদলগাছীতে সাংবাদিক আশরাফুল ইসলামের স্মরণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রংপুরে সাংবাদিক হত্যা চেষ্টা মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার নড়াইলে বাস টার্মিনালে অবৈধ টোল আদায় বন্ধে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় গুজব রুখতে হিন্দু মুসলিম ঐক্যবদ্ধ

রিয়াজুল হক সাগর,রংপুর
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫
  • ৬০ Time View

রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর:

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ধর্মীয় অনুভূতিকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়া উত্তেজনা প্রশাসনের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও এলাকার সচেতন মহলের সমন্বয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ধর্মীয় উস্কানীমূলক কর্মকাণ্ড, সব সন্ত্রাস,ফ্যাসিবাদীদের অপরাজনৈতিক অপচেষ্টা থেকে এলাকাবাসী ফিরে পেয়েছে স্বস্তি ও নিরাপত্তা।

ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর গ্রামে একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্ট ঘিরে। সেখানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ উঠে রঞ্জণ কুমার নামক এক কলেজ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। পুলিশ দ্রুত তাকে আটক করে এবং আদালতের নির্দেশে সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।

এসময় উত্তেজিত কিছু মানুষ আবেগের বশবর্তী হয়ে একটি বাড়িতে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে।পরবর্তীতে বিষয়টি মব সন্ত্রাসে পরিণত হলে পুলিশের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে । পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর টহল জোরদারের মাধ্যমে মব সন্ত্রাস ও ধর্মীয় উস্কানীমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ হলে এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত্ব হয়। পাশাপাশি এলাকার সচেতন মহল সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনকে সহায়তা করে এবং সবাইকে সচেতন করতেও সার্বিক ভূমিকা রাখে।

আলদাতপুর ছয়আনি এলাকার বাসিন্দা কনিকা রানী বলেন, “ এখন কোন সমস্যা নাই। যেটুকু ভাঙচুর হয়েছিল, সরকারি ভাবে মেরামত করে দিয়েছে।
খলেয়া গঞ্জিপুর এলাকার ব্যবসায়ী ছালেক বলেন, আমরা হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই। আমাদের মধ্যে কোন বিভেদ নাই। আমরা আগে যেমন সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ ছিলাম এখনো আছি। একই এলাকার রবীন্দ্রনাথ রায় বলেন, “আমরা সবাই মিলে যেমন আগে শান্তিতে ছিলাম, তেমনই থাকতে চাই। সেনাবাহিনী ও পুলিশ সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়ায়, এখন আর কোনো ভয় নেই।”

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ গঙ্গাচড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ কুমার রায় বলেন, আমি হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানের যে কোন সমস্যায় পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। আলদাদপুরের রোববার মাগুড়া থেকে কিছু লোক ধর্মীয় উস্কানীমূলক কর্মকাণ্ড ও মব সন্ত্রাসের চেষ্টা করলেও প্রশাসন সব নিয়ন্ত্রণ করেছে।
হিন্দু- বৌদ্ধ- ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক মনিন্দ্র কুমার সরকার বলেন,যে অপরাধ করেছে, হোক সে হিন্দু, আমরা তার শাস্তি দাবী করি। তবে এই হিন্দু সম্প্রদায় যেন এখানে নির্বিঘ্নে বসবাস করতে পারে সে বিষয়ে প্রশাসনের সহোযোগীতা কামনা করছি। আমরা মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ সব জাতি মিলে একটি মানবিক রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টায় সবাই ইতিবাচক ভূমিকা রাখি ।

গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি আল এমরান জানান, “গুজব ছড়ানোর শুরুর মুহূর্ত থেকেই আমরা সতর্ক ছিলাম। জনপ্রতিনিধি ও ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিস্থিতি শান্ত রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।”

সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, “ জাতি -ধর্ম – বর্ণ নির্বিশেষে সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখতে আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছি। কোনো ধরনের বিশ শৃঙ্খলা করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সবাই সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছি।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা জানান, “ঘটনার পরপরই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছি। আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা এবং জরুরি সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। যেটুকু ক্ষতি হয়েছে, সেটুকুও সরকারি অর্থায়নে মেরামত করা হচ্ছে। স্থানীয়দের কোন গুজব কর্ণপাত না করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category