বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ১২:০৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করায় উপদেষ্টা পরিষদের কিছু সদস্যের মন খারাপ : মেজর হাফিজ জনগণের ভোট দেয়ার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে : রংপুরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় রংপুরের গঙ্গাচড়ায় নিখোঁজ হওয়া দুই শিশুর মরদেহ  উদ্ধার টুঙ্গিপাড়ায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের থানা সম্মেলন অনুষ্ঠিত পেকুয়া শহীদ ওয়াসিমের স্মরণে স্মৃতি ফলক উন্মোচন ও বৃক্ষ রোপণ  জুড়ীতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উদযাপন  ত্রিশালে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে খেলা ও পুরস্কার বিতরণ জুলাই শহিদ পরিবার,আহত ও সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের নিয়ে সম্মেলন ও দোয়া মাহফিল শ্রীপুরে গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিএনপির বিজয় র‍্যালীতে জনতার ঢল  ট্রাম্পকে গাজা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে চিঠি ইসরায়েলি অবসরপ্রাপ্ত ৬শ’ কর্মকর্তার

মুকসুদপুরে মামলাবাজ নুরু শেখের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

কে এম সাইফুর রহমান, গোপালগঞ্জ
  • Update Time : রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ২০০ Time View

কে এম সাইফুর রহমান,  গোপালগঞ্জ 

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মামলাবাজ নুরু শেখের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী। অভিযুক্ত নুরু শেখ মিথ্যা মামলা দিয়ে সর্বশান্ত করেছে মহারাজপুর গ্রামের একাধিক পরিবারকে। পরে একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে ওই গ্রামে গিয়ে জানা যায়, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের মহারাজপুর গ্রামের মৃত জহুর শেখের ছেলে নুরু শেখ (৫০), পেশায় তেমন কিছু না করলেও এলাকার নিরীহ সাধারণ জনগণকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন‌ মামলা দিয়ে আপোস-মীমাংসার নামে অর্থ আদায় করে থাকে। মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ফলে তার বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস দেখায় না।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী মহারাজপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য আবুল বশার (বিশা) মাতুব্বর (৫৫) বলেন, নুরু শেখ প্রায় ৯ বছর পূর্বে তার প্রথম স্ত্রী আছমা বেগম ঢাকা যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় ফরিদপুরের জামতলায় মারা গেলে তিনি তা গোপন করে আমার বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত, মামলা নং- ৩৪৭/১৬, ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ৫/৭/৯ (১) দঃ বিঃ, মুকসুদপুর থানা মামলা নং- ০৫/২০১৫ দায়ের করে আমাকে বিনা দোষে জেল খাটায়। পরে বিজ্ঞ বিচারক তথ্য-উপাত্ত ও চূড়ান্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত মিথ্যা মামলা থেকে আমাকে অব্যাহতি দেয়। এরপর উক্ত মামলার সাক্ষী নুরু শেখের বড় মেয়ে পান্না খানম পিতার সাথে মনোমালিন্যে আত্মহত্যা করে। পরে নুরু শেখ আত্মহত্যার ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার ছেলে, আপন ভাইদের সহ এলাকার নিরীহ লোকদের নাম উল্লেখ করে মুকসুদপুর জি.আর- ১১/১৬ অপর আরেকটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। পরবর্তীতে, উক্ত মামলায় তথ্য-উপাত্ত ও চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বিজ্ঞ আদালত থেকে তারা অব্যাহতি পান।

মহারাজপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের অপর এক ভুক্তভোগী মোঃ মিরাজ গাজী বলেন, আমার দুঃসময়ে নুরু শেখ আমাকে ব্যাংক থেকে ঋণ তুলে দেওয়ার কথা বলে আমার জমির মূল দলিল ও স্বাক্ষরযুক্ত দুইটি ফাঁকা চেক নিয়ে আমার বিরুদ্ধে ডিবিতে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে দুই দফায় ৩ লক্ষ টাকা আদায় করেছিলো। অপর আরেক ভুক্তভোগী ওই গ্রামের ইতালী প্রবাসী ওবায়দুর রহমানের স্ত্রী রওশনারা বেগম (৩৫) জানান, নুরু শেখ গংদের বিভিন্ন অপকর্মের কথা যেন কাউকে না বলি সেজন্য আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে মানসিকভাবেভাবে নির্যাতন করে চলেছে।

বর্তমানে আমি পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের নিকট সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আমি এর সঠিক বিচার চাই। এ বিষয়ে অপর আরেক ভুক্তভোগী বাবলু গাজী (৫৬) জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে নুরু শেখ ও তার লোকজন আমাকেও আমার স্ত্রী মর্জিনাকে প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। পরবর্তীতে, আমার ছেলে মফিজ গাজী (১৯) মুকসুদপুর থানায় নূরু শেখ গংদের বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করে, মুকসুদপুর থানার মামলা নং- ১৬, তারিখ ১৪/১০/২০২৩। এ ঘটনায় প্রতিশোধ নিতে নূরু শেখ তার আপন বয়োবৃদ্ধ ফুফু সোনাই বিবি (৭০) কে গুরুতর আহত করে থানায় আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। আমরা এলাকাবাসী নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে নূরু শেখের বিচার দাবি করছি সেই সাথে আমাদের গ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এবিষয়ে মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের বারবার নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সালাউদ্দীন মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, নুরু শেখ আমার ইউনিয়নের একজন ভোটার। সে প্রকৃত পক্ষেই একজন মামলাবাজ। আমি তাকে বলেছি তোমার যদি কারোর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকে তাহলে তুমি গ্রাম আদালতে আসো। সেখানে উপযুক্ত বিচার হবে। কিন্তু সে আসেনি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত নূরু শেখ বলেন, আমি গ্রামের মাতুব্বরদের পরামর্শে আবুল বশার (বিশা) মাতুব্বরের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ছিলাম। আমি মিথ্যা মামলা দিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা নেই না, আমার প্রতিপক্ষরা এসব কথা বলছে।

মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিষয়টি তদন্তনাধীন রয়েছে, এ বিষয়ে এখন কোন মন্তব্য করা যাচ্ছে না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category