মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রংপুরে ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড প্রায় ১২ শ ঘর-বাড়ি উদ্দীপনা ও প্রত্যয়ের মধ্য দিয়ে রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের নতুন কমিটির অভিষেক ৪৭,৭১ ও ২৪শের বিপ্লব অর্থবহ করতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার বিকল্প নাই: শ্রীপুরে দুর্নীতিমুক্ত-সন্ত্রাসমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গ্রাম্য বৈঠক অনুষ্ঠিত  ‎তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন শ্রীপুরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শারদীয় শুভেচ্ছা ও উপহার বিতরণ নওগাঁর পত্নীতলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান নিহত বদলগাছীতে সাংবাদিক আশরাফুল ইসলামের স্মরণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রংপুরে সাংবাদিক হত্যা চেষ্টা মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার নড়াইলে বাস টার্মিনালে অবৈধ টোল আদায় বন্ধে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ

প্রশাসন ক্যাডারে অনেক দৌড়াদৌড়ি, আপনি তো শারীরিক প্রতিবন্ধী?

রুপান্তর সংবাদ ডেস্কঃ
  • Update Time : শুক্রবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ১৭০ Time View

রুপান্তর সংবাদ ডেস্কঃ

৪৩তম বিসিএসের শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী উল্লাস পাল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। নর্দান কলেজ বাংলাদেশ থেকে এইচএসসি ও শরীয়তপুরের কার্তিকপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। দুটোতেই জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন উল্লাস পাল।

এর আগে ৪০তম বিসিএস ও ৪১তম বিসিএসেও মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। ৪০তম বিসিএসে পাস করলেও ক্যাডার ও নন-ক্যাডার কোনো পদেই সুপারিশ পাননি। তবে সেই সময়ের মনের কষ্ট এখন আর নেই উল্লাস পালের। কারণ তিনি বিসিএস ক্যাডার হয়ে গেছেন।

বিসিএস জয় করার পর নিজের চড়াই-উতরাই এর গল্প শুনিয়েছেন গণমাধ্যমে উল্লাস পাল।

এই মেধাবী বলেন, স্বাভাবিক ও সুস্থ প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এত দূর এসেছি। হাত ও পা বাঁকা হওয়ার কারণে হাতে লিখতে সমস্যা হয়, ডান হাতে কোনো শক্তি পাই না। হাঁটতেও সমস্যা হয়। কিন্তু কখনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রতিবন্ধী কোটা নেওয়ার কথা চিন্তাও করিনি। মানসিকভাবে নিজেকে অন্য আর ১০ জনের মতো সুস্থ মনে করি। তবে অনেক বাধা এসেছিল, সেগুলো টপকে এত দূর এগিয়ে এসেছি।
জন্মের পর শিশুরা যে বয়সে স্বাভাবিক নিয়মে হাঁটা শেখে, উল্লাস পাল সেভাবে হাঁটতে পারতেন না।

কারণ, জন্মগতভাবেই তার দুই হাত ও দুই পা বাঁকা ছিল। তবে মা-বাবা তার চিকিৎসার কমতি রাখেননি। চিকিৎসার জন্য ভারতেও নেওয়া হয়েছিল উল্লাস পালকে।
তিনি বলেন, চিকিৎসকদের শতচেষ্টার পরও হাত-পা স্বাভাবিক হয়নি। তবে একটু বয়স হওয়ার পর হাঁটতে শিখি। কিন্তু স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারি না।

বাড়ির পাশেই কার্তিকপুর পালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু হয়। এর পর আর পেছনে ফিরে তাকাইনি।

শারীরিক প্রতিবন্ধকতার ওপর কারও হাত নেই। কোনো শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে নেতিবাচক কথা বলে তার মনোবল ছোট করা ঠিক নয়। আমরাও চাই সামর্থ্য কাজে লাগিয়ে বিকশিত হতে, আমাদের স্বপ্নগুলো পূরণ করতে
উল্লাস পাল বলেন, নিজেকে একটু অন্য রকম লাগত। কারণ সবাই আমার চেয়ে আলাদা। ছোটবেলা থেকেই একটা লজ্জাবোধ কাজ করত। স্কুলের সহপাঠীদের সঙ্গে খেলতে চেষ্টা করতাম, কিন্তু সেসব কঠিন খেলা (হাডুডু, গোল্লাছুট ও ক্রিকেট) আমার দ্বারা সম্ভব হতো না। তাই আমি দর্শক। স্কুলে যাওয়ার পথে অনেক অবুঝ বাচ্চারা আমার গঠন দেখে হাসি-তামাশায় ব্যস্ত থাকত। পড়াশোনায় অন্যদের চেয়ে এগিয়ে ছিলাম, তাই শিক্ষকদের কাছ থেকে ভালোবাসা পেয়েছি। বন্ধুদের সাহায্য পেয়েছি সব সময়। পরিবার সব সময় পাশে ছিল, নইলে এত দূর আসা সম্ভব ছিল না।

নিজের প্রথম ৪০তম বিসিএসে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা পাশ করে মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন উল্লাস পাল। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে তাকে শুনতে হয় নেতিবাচক প্রশ্ন। ৪০তম বিসিএসে উল্লাস পালের প্রথম পছন্দ ছিল প্রশাসন ক্যাডার।

মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে একজন পরীক্ষক তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘প্রশাসন ক্যাডারে অনেক দৌড়াদৌড়ি করতে হয়, বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। আপনার যেহেতু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তাই এসব কাজ করতে পারবেন বলে মনে হয়?’ এমন প্রশ্ন শুনে উল্লাস পালের মনে হয়েছিল, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকার কারণে তিনি মনে হয় তার পছন্দের ক্যাডার প্রশাসন পাননি।

উল্লাস পাল বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধকতার ওপর কারও হাত নেই। কোনো শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে নেতিবাচক কথা বলে তার মনোবল ছোট করা ঠিক নয়। আমরাও চাই আমাদের সামর্থ্য কাজে লাগিয়ে বিকশিত হতে, আমাদের স্বপ্নগুলো পূরণ করতে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category