বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
তরুন প্রজন্মের জন্য নতুন গান নিয়ে আসছেন কন্ঠ শিল্পী তমালিকা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করায় উপদেষ্টা পরিষদের কিছু সদস্যের মন খারাপ : মেজর হাফিজ জনগণের ভোট দেয়ার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে : রংপুরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় রংপুরের গঙ্গাচড়ায় নিখোঁজ হওয়া দুই শিশুর মরদেহ  উদ্ধার টুঙ্গিপাড়ায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের থানা সম্মেলন অনুষ্ঠিত পেকুয়া শহীদ ওয়াসিমের স্মরণে স্মৃতি ফলক উন্মোচন ও বৃক্ষ রোপণ  জুড়ীতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উদযাপন  ত্রিশালে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে খেলা ও পুরস্কার বিতরণ জুলাই শহিদ পরিবার,আহত ও সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের নিয়ে সম্মেলন ও দোয়া মাহফিল শ্রীপুরে গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিএনপির বিজয় র‍্যালীতে জনতার ঢল 

রাজশাহী মহানগরীর বহরমপুরে মাদকের রমরমা ব্যবসা 

রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
  • Update Time : বুধবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ১২০ Time View
 রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহী মহানগরীর বহরমপুরে মাদকে ছয়লাব হয়ে পড়েছে। হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক। অদৃশ্য চাপে গ্রেফতার করতে গিয়ে হয়রানিতে পড়তে হয়েছে পুলিশ প্রশাসনকে।
বহরমপুর এলাকায় মাদকের সিন্ডিকেট পরিচালনাকারী রোকন উদ্দিনের ছেলে সেন্টু ও তাঁর স্ত্রী মিতা এবং খোরশেদ আলীর ছেলে রাব্বিল। এরা অদৃশ্য এক গডফাদারের ছত্রছায়ায় গড়ে তুলেছেন মাদকের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তাদের বাসায় দিন-রাত সমানভাবে প্রকাশ্যেই চলে মাদক বেচাকেনা। সেই সাথে চলে, সেখানে বসেই সেবন। টাকা দিলেই যে কোনো বয়সের যে কেউ পায় হেরোইন, ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক। অনেক স্কুল কলেজের ড্রেস পরা ছাত্ররাও নিচ্ছে দেদারসে মাদক। তাদের এই মাদক বিক্রির হাটে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই চলে নির্যাতন। এমন অনেক ভুক্তভোগীরা বলছেন অদৃশ্য এক শক্তি তাদের ছায়া দিয়ে রেখেছে। সেই শক্তি বলয়ে থানা পুলিশও অসহায় এদের কাছে। এদের বিরুদ্ধেও মাদকসহ নানা অপকর্মের ডজন ডজন মামলা আছে। বর্তমানে সেন্টু জেলে থাকলেও বন্ধ হয়নি মাদক ব্যবসা। ওই অদৃশ্য শক্তির কাছে থানা পুলিশও কিছুটা অসহায়। অভিযান করে অদৃশ্য শক্তির কাছে মিথ্যা হয়রানিতেও পড়তে হয়েছে থানা পুলিশকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রকাশ্যেই চলছে মাদক বিক্রি। তাদের ভয়ে মিডিয়ার সামনে মুখ খুলছে না প্রতিবেশীরা। তবে সেখানকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বলছে এসকল মাদক কারবারির কাছে প্রচুর সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী ও চোর আছে। যারা তাদের নিয়মিত কাস্টমার। কেউ এদের বিরুদ্ধে মুখ খুললে নেমে আসে নির্যাতন ও হয়রানি। তাদের কারণে এলাকায় চুরি ছিনতাই বেড়েছে। যুব সমাজ আজ ধংসের মুখে। কেউ প্রতিবাদ না করায় দিন দিন তাদের সাহস বেড়েই চলেছে।
অন্যদিকে প্রতিবেদক গোপনে মাদকের হাট লক্ষিপুর আইডি বাগানপাড়া ও বহরমপুরে গিয়ে দেখেন ভিন্ন চিত্র। অনেকটা প্রকাশ্যেই এক নারী হাতে ব্যাগ নিয়ে হেরোইনের পুরিয়া দিচ্ছেন সেবনকারীদের। রাজশাহী নগরীর আইডি বাগানপাড়ায় এ ভাবেই প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছে ওই এলাকার সাজ্জাদের মেয়ে পিংকি ও টাকা নিচ্ছে টুনু শেখের স্ত্রী সুলতানা বেগম। এ ভাবে দিনরাত ২৪ ঘন্টা আইডি বাগানপাড়া ও রেল লাইনের ধারে রমরমা মাদক ব্যবসা চলছে। বাড়ির সামনেই এ যেন মাদকের হাট বসেছে এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।
প্রতিদিন ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজা, ট্যাপান্টাডল টেবলেটসহ বিভিন্ন মাদক কিনতে আসছে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই মাদক বিক্রির স্পটে। এ সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন মাদক কারবারি রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে আছে অনেকেই।
প্রতিবেদককে স্থানীয়রা বলেন, বহরমপুর এলাকায় মাদক সিন্ডিকেটের মূল হোতা রাব্বিল ও সেন্টুর পরিবার। তবে আইডি বাগানপাড়ার রেল লাইন এলাকায় প্রভাবশালী মাদক কারবারি হলো রাব্বুল শেখের ছেলে রুবেল ও আকুলের ছেলে জন। রুবেল ও জনের নেতৃত্বে রমরমা মাদক ব্যবসা চলছে। তাদের নেতৃত্বে অন্যান্য মাদক কারবারি যেমন আইডি বাগানপাড়া রেল লাইনের ধারে জনের স্ত্রী মোছা সাইদা বেগম, সাজ্জাদের মেয়ে  পিংকি, সম্রাটের স্ত্রী জরিনা বেগম ও তার নাতনি বন্যা, সাজ্জাদের স্ত্রী হাসনা বেগম ওরফে ডাকান্নি বেগম, লক্ষিপুর বাঁকির মোড় ডোমপাড়া এলাকার সেলিমের ছেলে সম্রাট, রাব্বুল শেখের স্ত্রী ভানু বেগম, টুনু শেখের স্ত্রী সুলতানা, দাসপুকুর হজারগত্ত এলাকার জনির স্ত্রী সাথী বেগম, আইডি বাগানপাড়া রেল লাইন ধার বজলুর মেয়ে লাকি এবং ফেলকি, লক্ষিপুর ডিবি অফিসের সন্নিকটে ইউনাইটেড সেন্টারের উত্তর গলি’র বাবু’র ছেলে বিপ্লব, বেদেনার ছেলে তাঞ্জিলসহ কিছু নারী ও পুরুষ এখন মাদকের রমরমা ব্যবসায় লিপ্ত।। এরা সবাই বর্তমানে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। এদের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মাদক মামলাও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু এলাকাবাসী বলেন, মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করলেই উল্টা মাদক কারবারিরা হুমকি দিয়ে থাকে, বেশি কথা বললে উল্টা মাদক দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। প্রকাশ্যেই তারা বলেন পুলিশ, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রনসহ সবাইকে ম্যানেজ করে ব্যবসা করি। মাদক ব্যবসায়ীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। তাদের অবাদে মাদক বিক্রির কারনে এলাকার যুবকরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। দ্রুত এসব মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যুবসমাজ ধংস হয়ে যাবে।
ডিবি আনোয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম বেগম বলেন, যুব সমাজ আজ মাদকের ভয়াল থাবায় ধংসের মুখে। এটা এই এলাকায় এখন ছয়লাব হয়ে গেছে। এসব বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
জানতে চাইলে রাসিকের ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেন বলেন, আমি আমার ওয়ার্ডে মাদকের বিরুদ্ধে সব সময় অবস্থান নিয়ে থাকি। কিছু শক্তিশালী চক্র এসব মাদক কারবারিকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদদ দিচ্ছে। আমি এসব বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। প্রশাসন চাইলে আমিও সহযোগিতা করবো।
জানতে চাইলে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র এডিসি (সদ্য পুলিশ সুপার পদে পদন্নোতি প্রাপ্ত) জামিরুল ইসলাম বলেন,  মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। মাদক কারবারিরা আটক হয়। জেল থেকে বের হয়ে আবারও তারা মাদক ব্যবসায় লিপ্ত হয়। অন্য এক প্রশ্নে তিনি আরো বলেন, যদি কোন পুলিশ সদস্য এসব মাদক কারবারিকে কোন প্রকার সহযোগিতা করে তাহলে তদন্তপূর্বক তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category