স্টাফ রিপোটারঃ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের আমবাড়ী গ্রামের শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ ও গণেশ পাগল সেবাশ্রমে ৬৫ ফুট উচ্চতার সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়েছে।
বুধবার ধর্মীয় উৎসবের পঞ্চমী তিথিতে বিদ্যা ও জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন ভক্তরা।পূজায় ঢাক, ঢোল, কাশির বাদ্য ও উলুধ্বনিতে গোটা এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।
এই পূজা দেখার জন্য আমবাড়ী গ্রামের আশপাশের এলাকা থেকে অসংখ্য মানুষ এসে জড়ো হয়েছেন পূজাস্থলে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সববয়সী মানুষ এসেছে এ গ্রামে পূজা দেখার জন্য। এই পূজাকে কেন্দ্র করে বসেছে তিন দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলা। আয়োজন করা হয়েছে গনেশ পাগলের মহোৎসবসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতিমাটি তৈরি করেছেন শ্রীবাস গাইন। তিনি বলেন, আমি আমার ৮ থেকে ১০ জন সহকারীকে নিয়ে এক মাস ধরে এ প্রতিমাটি তৈরি করেছি। আমি এর আগে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্য প্রতিমার বিগ্রহ তৈরি করেছি।এই সরস্বতী মার এত বড় বিগ্রহ শুধু এখানেই তৈরি করেছি। কিন্তু আমি এ ধরনের প্রতিমা তৈরি করতে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা নিয়ে থাকি। কিন্তু এটা আমার গ্রামের পূজা। আমি এই পূজা মন্ডপ কমিটির সহসভাপতি। আমাকে আয়োজকরা যা দেবেন আমি তাতেই খুশি।
পুরোহিত অশোক ভট্টাচার্য (৬০) বলেন, আমি ৪০ বছর ধরে পূজা করি। কিন্তু এত বড় সরস্বতী প্রতিমার পূজা আগে কখনো করিনি।আমি আজকে অনেক স্থানে পূজা করব। কিন্তু এখানে বাণী অর্চনার পূজা করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি।
পূজা কমুটির সভাপতি সুনিল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আমরা এলাকার যুবকরা মিলে এই পূজার আয়োজন করেছে। এর আগের বছর গুলোতে আমরা ৫০ ফুট উচ্চতার প্রতিমায় সরস্বতী পূজার আয়োজন করেছিলাম। এ বছর ৬৫ ফুট উচ্চতার সরস্বতী প্রতিমায় পূজার আয়োজন করেছি। এখানে আমরা তিনদিন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।আগামী কাল গনেশ পাগলের মহোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।আমাদের এই পূজায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা খরচ হবে। আমরা এ ধরনের পূজার আয়োজন করতে পেরে খুবই আনন্দিত।
কোটালীপাড়া থানার এসআই সুকান্ত বাউল, কাজল দাস ও কনস্টেবল আশিক কুমার রায় বলেন, আমরা জানতে পেরেছি এখানে ৬৫ ফুট সরস্বতী মায়ের পূজা অনুষ্ঠিত হবে। তাই আমরা অঞ্জলি দেওয়ার জন্য এসেছি। আমরা সবাই আনন্দ-ফুর্তির মধ্য দিয়ে পূজা উদযাপন করছি। আমরা কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ স্যারের পক্ষ থেকে এই পূজার আয়োজন যারা করেছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
উজিরপুর থেকে আগত আঁখি বৈদ্য বলেন, আমরা আমবাড়ী গ্রামে আত্মীয়র বাড়িতে এই পূজা দেখার জন্য এসেছি। যখন জানতে পারলাম ৬৫ ফুট উচ্চতার সরস্বতী প্রতিমায় পূজা হবে তখন এই পূজা দেখার জন্য ভাই বোন নিয়ে চলে আসলাম। আমার জীবনে এত বড় সরস্বতী প্রতিমা আগে কখনো দেখিনি। আমরা সরস্বতী মায়ের পূজায় আসতে পেরে অনেক আনন্দিত।