এইচ,এম শহিদুল ইসলাম,পেকুয়া
কক্সবাজারের পেকুয়ায় আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে কৃষিজমি জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর মেহেরনামা এলাকায় একটি প্রভাবশালী চক্র দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে ৫৭ শতক কৃষিজমি জবর দখল করে বলে জানান ভুক্তভোগী জমির মালিক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেহেরনামা মৌজার আবদুল হামিদ সিকদার পাড়া সংলগ্ন বানৌজা শেখ হাসিনা নৌ ঘাঁটি সংযোগ সড়কের পাশের ৫৭ শতক জায়গা ওয়ারিশী ও খরিদামূলে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখলে ছিলেন চকরিয়ার বদরখালী এলাকার হেলাল উদ্দিন মাহমুদ। ১৯৭৮ ইং থেকে আবদুল হামিদ সিকদার পাড়ার মৃত নজির আহমদের ছেলে শহিদুল ইসলাম গং এ জমি দেখভাল করে আসছিলেন। এরমধ্যে ২০২১ সাল থেকে জমির মালিক হেলাল উদ্দিন তাঁর চাষা পরিবর্তন করেন। ওই জমির দায়িত্ব দেন তেলিয়াকাটা এলাকার জাকের আহমেদকে। চাষা পরিবর্তনের ক্ষোভে শহিদুল গং গত মৌসুমে জমির পাকা ধান কেটে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় জমির মালিক হেলাল উদ্দিন চকরিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি ধান লুটের মামলা করেন। এখনো মামলাটি কক্সবাজার ডিবি পুলিশের কাছে তদন্তাধীন।
এদিকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি শহীদুল ইসলাম গং ওই জায়গা দাবী করে কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারার আবেদন করেন। আদালত ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে বিরোধীয় জায়গা সরেজমিন তদন্ত করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) পেকুয়াকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। প্রতিবেদন দাখিলের পূর্ব পর্যন্ত বিরোধীয় জমিতে স্থিতিশীল অবস্থা বজায় রাখতে বলা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার আদালতের এই নির্দেশ উপক্ষা করে ধান চারা রোপনের মাধ্যমে ওই জমি জবর জবরদখল করে নেন শহীদুল ইসলাম গং।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী হেফাজ উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার সকালে হেলাল উদ্দিনের জমিতে শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একই এলাকার ছরওয়ার উদ্দিন, ইব্রাহিম, নাছির উদ্দিন, ইলয়াছ, দিদার ও আবদুল্লাহসহ ২০-৩০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জমিতে নামে। এসময় তাঁরা ঘন্টা দেড়েকের মধ্যে পুরো জমিতে ধানের চারা রোপন করে চলে যান। এরপরে পেকুয়া থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
পেকুয়া থানার উপ সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) আবদুল হেকিম বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে মেহেরনামায় একটি পক্ষ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি জবরদখলের খবর পায় পুলিশ। আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছি। এর আগেই তাঁরা জমিতে ধানের চারা রোপন করে চলে যায়। উভয়পক্ষকে এব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে থানায় আসতে বলা হয়েছে। এখনো কেউ আসেনি।
জমির মালিক হেলাল উদ্দিন মাহমুদ বলেন, এই জমিটি আমার ওয়ারিশী ও খরিদামূলে মালিক। অন্যায়ভাবে শহীদুল গং আমার জায়গাটি দাবী করছে। জমির উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন তিনি। তদন্তে নিজেদের দখল দেখানোর জন্য আবার সে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমিতে চারা রোপন করছে তাঁরা। এ জমির মালিকানা নিয়ে পেকুয়া ইউনিয়ন পরিষদে স্পষ্টভাবে আমার পক্ষে রায় প্রচার আছে। তাছাড়া এব্যাপারে কক্সবাজার সহকারী জজ আদালতে বন্টননামার আরও একটি রায় প্রচার আছে। আমার নামে জমাভাগ খতিয়ান সৃজিত আছে।
Leave a Reply