বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ১২:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করায় উপদেষ্টা পরিষদের কিছু সদস্যের মন খারাপ : মেজর হাফিজ জনগণের ভোট দেয়ার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে : রংপুরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় রংপুরের গঙ্গাচড়ায় নিখোঁজ হওয়া দুই শিশুর মরদেহ  উদ্ধার টুঙ্গিপাড়ায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের থানা সম্মেলন অনুষ্ঠিত পেকুয়া শহীদ ওয়াসিমের স্মরণে স্মৃতি ফলক উন্মোচন ও বৃক্ষ রোপণ  জুড়ীতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উদযাপন  ত্রিশালে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে খেলা ও পুরস্কার বিতরণ জুলাই শহিদ পরিবার,আহত ও সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের নিয়ে সম্মেলন ও দোয়া মাহফিল শ্রীপুরে গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিএনপির বিজয় র‍্যালীতে জনতার ঢল  ট্রাম্পকে গাজা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে চিঠি ইসরায়েলি অবসরপ্রাপ্ত ৬শ’ কর্মকর্তার

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাজেহাল করতে কারারক্ষীর মিথ্যাচার

শফিকুল আলম ইমন, রাজশাহী
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০২৪
  • ৭৫ Time View

শফিকুল আলম ইমন, রাজশাহী

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার, ডেপুটি জেলার হানিফ, সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টর আবদুল বারি ও সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টর কবির ও আরো কয়েকজন কারারক্ষী ও সিভিল কর্মচারীর সমন্বয়ে কারাভ্যন্তরে প্রবেশের প্রাক্কালে আকস্মিক তল্লাশির মাধ্যমে মনিরুল ইসলাম নামে এক কারারক্ষীর পরিহিত ডিএমএস বুটের মোজার নীচ থেকে ৬ প্রকার অবৈধ দ্রব্যাদি উদ্ধারসহ জব্দ করা হয়।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার এর দায়িত্বে থাকা বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: ইমাম উদ্দিন’কে বিষয়টি অবহিত করে পরেরদিন রিপোর্ট লিখে অভিযুক্ত কারারক্ষী’কে হাজির করলে বিজ্ঞ অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ কারারক্ষীর নিকট বক্তব্য আকারে শোনেন। এসময় অভিযুক্ত কারারক্ষী দোষ স্বীকার করে নি:শর্ত ক্ষমা চান এবং ভবিষ্যতে এরকম কাজ করবে না মর্মে প্রতিশ্রুতি দেয়।

অভিযোগটি অবৈধ দ্রব্য সংক্রান্ত, এটা ক্ষমার অযোগ্য হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু হয়। পরবর্তীতে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ কারারক্ষী’ মনিরুল ইসলামকে অন্য কারাগারে তাৎক্ষণিক বদলি করেন। বর্তমানে অভিযুক্ত কারারক্ষী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে আছেন।

বদলীতে ক্ষিপ্ত হয়ে ডিআইজি প্রিজন্স, জেল সুপার, জেলারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারসহ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন তথ্য সরবরাহপূর্বক নানা হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন ওই কারারক্ষী।

মনিরুল ইসলাম নামে ওই কারারক্ষীর মিথ্যাচার, হয়রানি ও মানহানিকর ও ভিত্তিহীন লিখিত ও ভিডিও বক্তব্যের রোষানলে পড়েন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সাবেক সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল জলিল ও সাবেক জেলার মো: নিজাম উদ্দিন এবং রাজশাহী বিভাগ এর ডিআইজি প্রিজন মো: কামাল হোসেন।

প্রতিবেদকের অনুসন্ধানী তদন্তে ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে কারারক্ষী মনিরুলের অভিযোগের সত্যতা মেলেনি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত কারারক্ষী’কে প্রশ্ন করা হলে কোন প্রমাণ বা সদুত্তর দিতে পারেননি মনিরুল ইসলাম।

বরং ডিআইজি প্রিজন্স কামাল হোসেন এর যোগদানের পর হতে অদ্যাবধি নিবিড় তদারকির কারণে রাজশাহী বিভাগস্থ ৮ টি কারাগারের বন্দীদের খাবারের মান উন্নত হয়েছে এবং সাধারণ বন্দীদের মতে কারাগারে এখন শুধু ডাল দিয়েই ভাত খাওয়া যায়। এছাড়াও, কারা ক্যান্টিন এর শুকনা আইটেমসমূহ গায়ের দামে এবং ফলমুলসহ ভেজা আইটেমসমূহ ক্যান্টিন নীতিমালা অনুযায়ী ন্যায্যমূল্যে বন্দীদের নিকট বিক্রি করা হয়।

প্রমাণ ছাড়াই সুস্পষ্ট অভিযোগ না তুলে শুধুমাত্র হয়রানী এবং প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যাক্তি ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করেন ওই কারারক্ষী বলে মনে করছেন কারা কর্তৃপক্ষ। অভিযোগকারী কারারক্ষী কর্তৃক এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং হীনব্যাক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার নামান্তর । কোন কুচক্রীমহলের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উষ্কানিতে এ ধরণের অবাস্তব ও কাল্পনিক অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে মর্মে ডিআইজি প্রিজন্স কামাল হোসেন মনে করেন।

তিনি প্রতিটি অভিযোগের বিষয়ে চুলচেড়া বিশ্লেষণ করে অভিযোগকারীর আসল রূপ উন্মোচন করার অভিমত ব্যক্ত করেন। অসত্য, বানোয়াট, বাস্তবতাবির্জিত ও কাল্পনিক অভিযোগ সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের বক্তব্য নেয়ার অনুরোধ জানান। তিনি অভিযোগকারী কারারক্ষী মনিরুল’ কর্তৃক আনীত অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাইয়ের ব্যাপারে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য অনুরোধ করেন।

কারাগার হাসপাতালে প্রকৃত অসুস্থ অসহায় বন্দীদের ভর্তি না রেখে সুস্থ-সবল, বিত্তশালী ও প্রভাবশালী সুস্থ বন্দীদের এবং বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদকে ভর্তি রাখার বিষয়ে কারা হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. মিজানুর রহমান, ডা. আরেফিন সাব্বির ও ডা. জুবায়ের আলম বলেন, কারারক্ষী মনিরুল ইসলামের তোলা অভিযোগ সঠিক না। সে মিথ্যাচার করেছে। কারা হাসপাতাল নিয়ম মাফিক চলছে।

অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বন্দীদের দেখার সুযোগ ও কারা হাসপাতালে সুস্থ মানুষ রেখে অর্থ বাণিজ্য এবং কারারক্ষী মনিরের তোলা অভিযোগ সম্পর্কে সাবেক জেলার নিজাম উদ্দিন বলেন, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আমার বদলী হয়েছে। এখন কে কি বললো তাতে যায় আসে না। তবে এসব অভিযোগের ভিত্তি নাই। কারারক্ষী মনিরুল ইসলাম মিথ্যাচার করছেন।

বন্দিদের নির্যাতন ও তাদের প্রাপ্য রেশন অনুযায়ী খাবার না পাওয়াসহ অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে সাবেক জেল সুপার আব্দুল জলিলকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

অসুস্থ্য বন্দী রোগীদের কারা হাসপাতালে না রেখে, সুস্থ রোগী রেখে বাণিজ্যের বিষয়ে রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা আবু সাঈদ বলেন, এসব মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডার ছড়িয়ে লাভ নাই। আমি নিয়মিত সেখানে ভিজিট করি। সেখানে তিনজন ডাক্তার নিয়মিত রোগী দেখেন। রোগী ছাড়া সেখানে সুস্থ মানুষ থাকার সুযোগ নাই।

কারারক্ষী মনিরুল ইসলামের নিকট তল্লাশি অভিযানে উদ্ধার ৬ টি অবৈধ মালামাল সম্পর্কে জানতে চেয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ঈমান উদ্দিনকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। একারণে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সর্বপরি বিষয় নিয়ে অভিযোগ উত্তোলনকারী কারারক্ষী মনিরুল ইসলামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রতিটি ঘটনা সত্য বলে জানান। প্রমাণও আছে তাঁর কাছে। তবে এসব ঘটনায় তিনি চাপে আছেন বলেও উল্লেখ করেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগও তুলেন।

খেয়ালখুশিমত কারা এলাকায় তৈরিকৃত পিসিআর বাসা বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়াসহ উল্লেখিত অভিযোগ সম্পর্কে ডিআইজি প্রিজন্স কামাল হোসেন বলেন, বাসা বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ কারা কর্তৃপক্ষের এখতিয়ারাধীন। এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য নেয়াটাই যুক্তিযুক্ত হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category