বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
টুঙ্গিপাড়ায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের থানা সম্মেলন অনুষ্ঠিত পেকুয়া শহীদ ওয়াসিমের স্মরণে স্মৃতি ফলক উন্মোচন ও বৃক্ষ রোপণ  জুড়ীতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উদযাপন  ত্রিশালে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে খেলা ও পুরস্কার বিতরণ জুলাই শহিদ পরিবার,আহত ও সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের নিয়ে সম্মেলন ও দোয়া মাহফিল শ্রীপুরে গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিএনপির বিজয় র‍্যালীতে জনতার ঢল  ট্রাম্পকে গাজা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে চিঠি ইসরায়েলি অবসরপ্রাপ্ত ৬শ’ কর্মকর্তার গণঅভ্যুত্থান দিবসে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা জুলাই ঘোষণাপত্র অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে আমন্ত্রণ জুলাই ঘোষণাপত্র: তাহেরের নেতৃত্বে অংশ নেবে জামায়াতের প্রতিনিধিদল

ভারতকে শায়েস্তা করতে পাকিস্তানের পক্ষে লড়েছিল আরও দুই দেশ

রূপান্তর সংবাদ ডেস্ক
  • Update Time : শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫
  • ৩১ Time View

রূপান্তর সংবাদ ডেস্ক:

চলতি বছরে সাম্প্রতিককালের ভয়াবহতম সংঘাতে জড়িয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পাশাপাশি টানা ১৮ দিন সীমান্তে সংঘাতে লিপ্ত হয়েছিল চিরবৈরী প্রতিবেশী দেশ দুটি। যদিও বড় ধরনের যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই দেশ, তবে এবারের সংঘাতে চরম লজ্জা পেতে হয় ভারতকে। তাদের অত্যাধুনিক সামরিক প্রযুক্তিও ব্যর্থ প্রামাণিত হয় পাকিস্তানের কৌশলের সামনে।

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে এই লজ্জাজনক পরিস্থিতির জন্য এখন দুটি দেশকে দায়ী করছে ভারত। তাদের দাবি, গত ২৩ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত সংঘাতকালে পাকিস্তানের পাশাপাশি সামরিক শক্তিধর আরও দুটি দেশের সঙ্গেও লড়াই করতে হয়েছিল ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে। ওই সময় পাকিস্তান তাদের ‘দৃশ্যমান’ প্রতিপক্ষ হলেও আড়াল থেকে তাদের বিরুদ্ধে লড়েছিল ওই দেশ দুটি।

শুক্রবার (৪ জুলাই) ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) নিউ এজ মিলিটারি টেকনোলজিস প্রোগ্রামে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনটাই দাবি করেছেন ভারতের উপসেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতকালে কেবল ‘এক নয়, তিন প্রতিপক্ষের’ বিরুদ্ধে ভারতকে লড়তে হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতের উপসেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং। তিনি বলেছেন, প্রতিপক্ষ হিসাবে পাকিস্তান ‘দৃশ্যমান’ হলেও নেপথ্যে থেকে চীন এবং তুরস্ক তাদের সাহায্য করেছে।

ভারতের ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ (কেপাবিলিটি, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সাসটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং বলেছেন, চীন পাকিস্তানকে শুধু সামরিক সরঞ্জামই দেয়নি, সেগুলোর কার্যকারিতা যাচাইয়ের ক্ষেত্র হিসেবে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের সংঘাতকে কাজে লাগিয়েছে তারা।

অবশ্য ব্যর্থতার জন্য নিজেদের সমালোচনাও করতে ছাড়েননি ভারতীয় সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় এ কর্মকর্তা। রাহুল আর সিং বলেছেন, কার্যকর সরবরাহ ব্যবস্থার অভাবে সামরিক সরঞ্জাম ‘সময় মতো এসে পৌঁছায়নি’ নাহলে, ‘গল্পটা হয়ত একটু অন্যরকম হতো। তার এই মন্তব্য ঘিরে ইতোমধ্যে বেশ তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়েছে ভারতে। চীনের প্রসঙ্গ টেনে কেন্দ্র সরকারকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীদল কংগ্রেস।

প্রবীণ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ অভিযোগ তুলেছেন, পাকিস্তানকে সাহায্যের বিষয়ে চীনের ভূমিকা নিয়ে যা এতদিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে, পাবলিক প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন ডেপুটি আর্মি চিফ উপ-সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং। এটা সেই চীন যারা পাঁচ বছর আগে লাদাখে স্থিতাবস্থা পুরোপুরি বদলে দিয়েছিল। কিন্তু ২০২০ সালের ১৯ জুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাদের ক্লিন চিট দেন।

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল সিংর ভাষণে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক কিছু বিষয় উঠে এসেছে, যা ভারতের মাথায় রাখা উচিত। পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞ উপমন্যু এ ব্যাপারে বলেছেন, কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে মাথায় রেখেই পাকিস্তানের সঙ্গে চীন তাদের নৈকট্য বাড়িয়েছে এবং সাম্প্রতিক উত্তেজনার সময় সে দেশ যে পাকিস্তানকে সাহায্য করবে, তা অভিপ্রেতই ছিল। এই অঞ্চলে শান্তি ও ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে ভারতকে প্রতিবেশী দেশের পাশাপাশি তাদের সহায়তাকারী দেশগুলোর কথাও ভাবতে হবে।

আর সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের বিষয়ে যে মন্তব্য করেছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল সিং, তার দ্রুত সমাধান প্রয়োজন বলেই মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার এবং সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ প্রফুল্ল বক্সী বলেন, সামরিক সরঞ্জামের সাপ্লাই চেইন সম্পর্কে যে তথ্য প্রকাশ পেয়েছে, সেনা কর্মকর্তাদের অনেকেই সে বিষয়ে আগেও বলে এসেছেন। ভবিষ্যতের কথা ভেবে এসব বিষয় গুরুত্ব সহকারে দেখা এবং মোকাবিলা করা দরকার।

ভারতের উপসেনাপ্রধান রাহুল আর সিং বলেন, পাকিস্তানকে চীন সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে। কারণ গত পাঁচ বছরের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান যে সামরিক সরঞ্জাম পেয়েছে, তার ৮১ শতাংশ এসেছে চীন থেকে। আর চীন, একটা পুরোনো প্রবাদ ভালোভাবেই অনুসরণ করেছে, ধার করা ছুরি দিয়ে হত্যা করা… তাই তারা উত্তর সীমান্তে কাদা ছোড়াছুড়ির খেলায় জড়িয়ে পড়ার চেয়ে (অন্যকে) যন্ত্রণা দেওয়ার জন্য প্রতিবেশীকে ব্যবহার করেছে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে চীনের ভূমিকা সম্পর্কে আগেও অভিযোগ উঠেছিল। পাকিস্তানের প্রতি তুরস্কের সমর্থনও স্পষ্টভাবেই প্রকাশ্যে এসেছে এর আগে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিংয়ের কথায়, চীন একটা বিষয় বুঝতে পেরেছে যে, পাকিস্তানকে দিয়ে তাদের তৈরি অস্ত্রগুলোকে ভারতের বিভিন্ন সিস্টেমের বিরুদ্ধে যাচাই করে দেখতে পারবে তারা। তাই এটা তাদের কাছে এক ধরনের পরীক্ষাগারের মতো ছিল। এর বাইরে, তুরস্কও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে; যা পাকিস্তানকে সাহায্য করেছে। আমরা দেখেছি যে সংঘর্ষের সময় অনেক ধরনের ড্রোন ছিল, সঙ্গে প্রশিক্ষিণপ্রাপ্ত ব্যক্তিও ছিল।

চীন যে স্যাটেলাইট ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট সামরিক তথ্য পাকিস্তানকে নিয়মিতভাবে দিয়েছে, সেই বিষয়েও উল্লেখ করেন তিনি। রাহুল আর সিং বলেন, যখন ডিজিএমও পর্যায়ের আলোচনা চলছিল, তখন পাকিস্তান উল্লেখ করেছিল, আমরা জানি যে আপনার অমুক ভেক্টর রেডি রয়েছে এবং যে কোনও পদক্ষেপ নিতে পারে। আমরা আপনাদের সেটা প্রত্যাহার করার অনুরোধ করব। তার মানে, পাকিস্তান জানতো আমাদের কাছে এমন ভেক্টর প্রস্তুত আছে; যা তাদের ওপর চরমতম আঘাত হানতে পারে।

রাহুল আর সিং বলেছেন, এটা স্পষ্ট যে চীন থেকে লাইভ ইনপুট পাচ্ছিল পাকিস্তান। তাই ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category