এইচ, এম শহীদ,পেকুয়া (কক্সবাজার ):
কক্সবাজারের পেকুয়ায় একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে প্রায় ১৬ একর জায়গাজুড়ে থাকা একটি চিংড়ি ঘেরের বাঁধ কেটে দিয়েছে। এতে ঘেরে থাকা প্রায় ১০ লক্ষ টাকার চিংড়ি পোনার ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং যে কোনো সময় বড় ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। রবিবার (১৬ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের নতুনঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের বরাতে জানা যায়, ২০ থেকে ৩০ জনের একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ চিংড়ি ঘেরে হানা দেয় এবং চারটি স্থানে বাঁধ কেটে দেয়। হামলার সময় তারা ঘেরের মালিক ফজল করিমকে মারধরেরও চেষ্টা করে। দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। পরে স্থানীয় নারী-পুরুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে হামলাকারীদের প্রতিরোধ করে। চিংড়ি ঘেরের মালিক ফজল করিম জানান, তিনি চাঁদপুরের রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম (সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী)-এর মালিকানাধীন জমি এক বছরের জন্য ৯ লক্ষ টাকা দিয়ে ইজারা (এফিডেভিটের মাধ্যমে) নেন। এরপর থেকে সেখানে লবণ ও চিংড়ি চাষ করে আসছেন। দুই মাস আগে তিনি প্রায় চার লক্ষ টাকার বাগদা চিংড়ির পোনা ছাড়েন। কিন্তু সরকারের পটপরিবর্তনের পর থেকে এলাকার একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী জমিটি দখলের পাঁয়তারা শুরু করে।
ফজল করিম আরও জানান, রোববার সকাল ১১টার দিকে নতুনঘোনা এলাকার মৃত নুরুল হকের পুত্র জমির উদ্দিন ও তার ছেলে গিয়াস উদ্দিন, বামলুর পাড়ার মৃত অলি মিয়ার পুত্র গিয়াস উদ্দিনসহ আরও অনেকে মিলে সিএনজি গাড়িযোগে ঘেরে হামলা চালায়। হামলার নেতৃত্বে ছিলেন মহি উদ্দিন, জাফর আলমের পুত্র জাহাঙ্গীর, রফিকের পুত্র, শামসুদ্দিনসহ অন্তত ২০ থেকে ৩০ জন সন্ত্রাসী। ঘটনার সময় দুর্বৃত্তরা ঘেরের বসতঘরে ভাঙচুর চালায় এবং মোবাইলে ভিডিও ধারণ করছিল এমন এক ব্যক্তির মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। ফজল করিম জানান, ঘের দখলের হুমকি এখনও অব্যাহত রয়েছে এবং চাষাবাদে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ কালু ও মোর্শেদ বলেন, ঘেরটি বৈধভাবে নেওয়া হয়েছে এবং সেখানে নিয়মিত চাষ চলছে। হঠাৎ করে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ঘেরটি দখলের চেষ্টা করে। স্থানীয়রা প্রতিরোধে এগিয়ে না এলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হতো। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। দখল-বেদখলকে কেন্দ্র করে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের সহিংসতা বা রক্তপাতের আশঙ্কা রয়েছে। দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ না হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা জানান, এ বিষয়ে কেউ অবগত করেনি,অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply