বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ট্রাম্পকে গাজা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে চিঠি ইসরায়েলি অবসরপ্রাপ্ত ৬শ’ কর্মকর্তার গণঅভ্যুত্থান দিবসে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা জুলাই ঘোষণাপত্র অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে আমন্ত্রণ জুলাই ঘোষণাপত্র: তাহেরের নেতৃত্বে অংশ নেবে জামায়াতের প্রতিনিধিদল রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা বিকেলে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা ফ্লাইট এক্সপার্ট, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির প্রতারণা গাইবান্ধায় বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত কবিতা: ভয় নেই তার ” লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল শ্রীপুরে সরকারি রাস্তা কেটে জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে

মার্কিন শুল্কের ছোবলে ইতালীয় রপ্তানি প্রতিষ্ঠান বিপাকে

মোঃ জাহিদ হাসান, ইতালি
  • Update Time : সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫
  • ৪৫ Time View

জাহিদ হাসান, ইতালি :

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যকার চলমান বাণিজ্য উত্তেজনার জেরে নতুন করে সংকটে পড়েছে ইতালির রপ্তানি খাত। আগামী ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কিছু পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের সরাসরি প্রভাব পড়বে ইতালির প্রায় ছয় হাজারের বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর, যারা প্রধানত মার্কিন বাজারে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করে থাকে।
২০২৪ সালে ইতালি যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩৯ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। ফ্যাশন, মেশিনারি, খাদ্যদ্রব্য এবং প্রিমিয়াম ওয়াইনের মতো পণ্যই এই রপ্তানির বড় অংশ জুড়ে। ইতালির রপ্তানিকারক সংস্থা কনফাইন্ডুস্ত্রিয়ার মতে, এ ধরনের শুল্ক ইতালীয় ছোট ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের জন্য কার্যত ‘আর্থিক আঘাত’ হিসেবে দেখা দেবে।
সংস্থাটির একজন মুখপাত্র বলেন, “আমাদের ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো এমনিতেই উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, শ্রমিক সংকট ও শক্তিশালী ইউরোর কারণে চাপের মধ্যে রয়েছে। এর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ তাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে আরও পিছিয়ে দেবে।”
এই শুল্ক আরোপের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তি—নিজেদের অভ্যন্তরীণ শিল্প রক্ষা করা এবং ইউরোপীয় পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা বজায় রাখা। তবে অর্থনীতিবিদদের অনেকেই বলছেন, এর ফলে বিশ্ববাজারে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
এদিকে, চলমান ডলার দুর্বলতার প্রভাবেও চাপে রয়েছে ইতালির রপ্তানি খাত। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউরো শক্তিশালী হয়ে উঠায় মার্কিন বাজারে ইউরোপীয় পণ্যের দাম তুলনামূলক বেশি হয়ে গেছে, যা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ হয়ে উঠছে।
তুরিনের একটি রপ্তানিমুখী ওয়াইন কোম্পানির মালিক ফ্রান্সেস্কো রুশো জানান, “আমরা প্রতিনিয়ত খরচ বাড়া, শুল্ক জটিলতা আর বাজারের চাহিদা কমে যাওয়ার মতো সমস্যায় ভুগছি। এখন যদি অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর হয়, তাহলে আমাদের মার্কিন বাজার থেকে সরে আসা ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না।”
অর্থনীতিবিদদের মতে, রপ্তানির এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে স্বল্পমেয়াদে আর্থিক প্রণোদনা ও দীর্ঘমেয়াদে নতুন বাজার খোঁজার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। একইসঙ্গে প্রয়োজন হবে ইউরোপীয় কূটনীতির আরও সক্রিয় ভূমিকা।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ যদি রোধ করা না যায়, তাহলে শুধু ইতালি নয়, গোটা ইউরোপের রপ্তানি কাঠামোই হুমকির মুখে পড়তে পারে।
অন্যদিকে ইতালির পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা বিষয়টি ইউরোপীয় কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় এনেছে এবং একটি সম্মিলিত কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইজি দা অ্যামিচি বলেন, “ইউরোপের উচিত হবে সম্মিলিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝানো যে, একতরফাভাবে এমন শুল্ক আরোপ শুধু বাণিজ্য নয়, দুই মহাদেশের সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category