শরিফা বেগম শিউলী, স্টাফ রিপোর্টার:
রংপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে জুলাই শহিদ পরিবার, আহত ও সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের নিয়ে সম্মিলন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।মঙ্গলবার (৫ই আগস্ট) সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবারবর্গ, আহত ও সম্মুখ সারির যোদ্ধাগণ উপস্থিত ছিলেন। রংপুর জেলাপ্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির যোদ্ধা ইমরান আহমেদ বলেন, যে উদ্দেশ্যে আমরা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছি তা আজও পুরোপুরি সফল হয়নি। উত্তরাঞ্চলের মানুষ প্রতিটি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আসলেও রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা থেকে সবসময় বঞ্চিত হয়ে আসছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরেও রংপুর অঞ্চলের বাজেট বৈষম্য রয়েই গেছে। সম্মুখ সারির যোদ্ধা ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পরে এসেও আমাদের আকাঙ্খা পূরণ হয়নি। সন্ত্রাসীদের অনতিবিলম্বে শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবারকে পুনর্বাসন ও আহত যোদ্ধাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে তিনি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
গণঅভ্যুত্থানে আহত মিফতাহুল জান্নাত মিতা বলেন, এখনো অনেক ক্ষেত্রে নারীর প্রতি বৈষম্য বিদ্যমান। এই অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে সকল সেক্টরে বৈষম্য নিরসন করা জরুরি। জুলাই আন্দোলনে শহিদ, আহত ও সম্মুখ সারির যোদ্ধাগণকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে। এছাড়াও জুলাই যোদ্ধাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। শহিদ আবু সাঈদের পিতা মকবুল হোসেন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আবু সাঈদসহ শহিদদের হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও উত্তরাঞ্চলের বৈষম্য নিরসনে চায়না সরকারের অর্থায়ণে প্রস্থাবিত হাসপাতালটি রংপুরে নির্মাণের জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাপনী বক্তব্যে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে ছাত্র-জনতা তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। অনেকেই আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারীদের আমরা যথাযথ সম্মান দিতে পারিনি। এদেশের সম্পদ সীমিত, আর এই সীমিত সম্পদ দিয়ে জুলাই যোদ্ধাদের আর্থিক সহযোগিতা করার জন্য সরকার চেষ্টা করছে। তিনি বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, রংপুর সিটি কর্পোরেশন ও জেলাপ্রশাসনের নিজস্ব তহবিল থেকে জুলাই শহিদ পরিবার, আহত ও চিকিৎসাধীন যোদ্ধাদের আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। অনুষ্ঠান শেষে জুলাই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শহিদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের মাঝে উপহার বিতরণ করা হয়।
Leave a Reply